হাসির গল্প – কাঁঠাল খাওয়ার বাজি
পঞ্চাশ বছর আগের কথা। এক গ্রামে দুই যমজ ভাই ছিল। তাদের একজনের নাম নদু, আর একজনের নাম গদু। চেহারায় তাদের এমন মিল যে, তাদের মা-বাবাও খুব সহজে চিনতে পারতেন না, কে নদু আর কে গদু! এতটা অবিকল চেহারার যমজ বড় একটা দেখা যায় না।
তো, যাই হোক, এদের বাড়ির লাগোয়া হাট। সপ্তাহে দু’দিন সে হাট বসে শুক্র ও সোমবারে। এমনকি এক হাটেরদিনে নদু তাদের বাড়ি সংলগ্ন কাঠাল হাটায় কাঁঠাল কিনতে গেছে। কাঁঠাল দেখেটেখে একজোড়া বড় কাঁঠাল তার ভারি পছন্দ হলো। সে মনে মনে ভাবে, এই কাঁঠাল জোড়া কিনতে পারলে বাড়ির সবাইকে নিয়ে আছুদা সহকারে খাওয়া যেত। সে কাঁঠালের দাম জিজ্ঞেস করে।
বিক্রেতা বলে : পছন্দ তো করছ নাজ্যের (রাজ্যের) ভারি কাডল। ইমুন পিরভিন (বিরাট) কাড়লের দামও বেশি। তুমি যে জোড়া পছন্দ করছ হের দাম পাঁচ টেকা। আড়াই টেকা কইরা পড়বো একখান।
নদু বলেঃ যে কাডল, ওয়া (ও তো) আমি একলাই একখান খাইবার পারি। তার আবার এত দাম ক্যা! দুইহান আড়াই টেকা দিমু।
বিক্রেতা ; ব্যাপারীর পো, চাপা মাইরো না। কাডল আজদাহা। দামও তাই বেশি। আর তুমি যুদি একলা একখান খাইবার পার, তাইলে তুমারে দুইহান কাডলই মাগনা দিমু।
নদু : কথা হাচা তো! কথার নড়চড় অইব না তো?
বিক্রেতা ; না, তা অইব না। এইহানে বইয়া যুদি একহান কাডল খাইবার পার, তা হইলে আর একহান বিনা পয়সায় দিমু।
নদু কাঁঠাল খেতে বসে। টপাটপ বড় বড় রসালো রোয়া মুখে পুরে দিতে থাকে। অর্ধেক খাওয়ার পর বলে, একটু পানি খামু। এই যে আমাগো বাড়ি। যামু আর আমু।
বিক্রেতা রাজি হয়। বাড়িতে গিয়ে যমজ ভাইকে ঘটনা বিবৃত করে বলে, জলদি যা। আমার খাওয়া কাডলটা শেষ কইরা জোড়ারটা লইয়া আইবি মাগনায়। মিনিট দুয়েক পরে গদু গিয়ে কাঁঠাল খেতে বসে এবং তা শেষ করে। পরে কোন কথা না বলে জোড়ার কাঁঠালটি কাঁধের গামছার ওপর বসিয়ে বাড়ির দিকে হাঁটা দেয়। বিক্রেতা রহস্য বুঝতে পারে না।
হাঁ করে তাকিয়ে থেকে বলে : শালার রাক্ষসের বাচ্চা নাকি?