বিপদে ধৈর্যধারণের শিক্ষণীয় গল্প
এক যোদ্ধা তার স্ত্রীকে নিয়ে শহরের কোলাহল থেকে দূরে একটি শান্ত লেকের দিকে ঘুরতে গেল। দুজনেই ছোট একটা ডিঙ্গি নৌকায় উঠে স্বচ্ছ পানির সৌন্দর্য উপভোগ করছিল। চারপাশের নীরব প্রকৃতি যেন তাদের মনে প্রশান্তির সুর বয়ে আনছিল।
কিন্তু হঠাৎ করেই আকাশ কালো মেঘে ঢেকে গেল। বাতাসের গতি বেড়ে চলল, আর মুহূর্তের মধ্যেই প্রচণ্ড ঝড় শুরু হলো। ছোট্ট ডিঙ্গি নৌকা দোল খেতে লাগল, উত্তাল ঢেউয়ের মাঝে পড়ে যেকোনো সময় উল্টে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হলো।
স্ত্রী আতঙ্কিত হয়ে পড়ল। সে স্বামীর দিকে চেয়ে বলল, “তুমি কি ভয় পাচ্ছ না? ঝড়ের তীব্রতা এত বেশি যে আমরা হয়তো আর তীরে ফিরতে পারব না। যদি অলৌকিক কিছু না ঘটে, তাহলে আজই আমাদের জীবনের শেষ দিন।”
কিন্তু যোদ্ধা নির্বিকার। তার চোখেমুখে কোনো ভয় নেই, বরং এক ধরনের প্রশান্তি খেলা করছে। স্ত্রী বিস্মিত হয়ে আবার বলল, “তুমি কি পাথর নাকি? এত বড় বিপদে পড়েও তুমি এতটা শান্ত!”
যোদ্ধা মৃদু হেসে তার খাপ থেকে তলোয়ার বের করল এবং স্ত্রীর গলার কাছে ধরে রাখল, তলোয়ারের ডগা মাত্র এক ইঞ্চি দূরে।
স্ত্রী হতবুদ্ধি হয়ে গেল, কিন্তু ভয় পেল না। বরং সে হেসে বলল, “আমি কেন ভয় পাব? তলোয়ার তোমার হাতে, আর তুমি তো আমার স্বামী। আমি জানি, তুমি আমাকে কতটা ভালবাসো। তুমি আমাকে আঘাত করতে পারবে না।”
যোদ্ধা এবার তলোয়ার খাপে ঢুকিয়ে শান্ত কণ্ঠে বলল, “ঠিক সেই কারণেই আমি এই ঝড়েও ভয় পাচ্ছি না। কারণ আমার জীবন যার হাতে, তিনি আমাকে ভালোবাসেন। এই ঝড় তার নিয়ন্ত্রণে, তাই আমি চিন্তিত নই।”
শিক্ষাঃ
আমাদের জীবনেও এমন ঝড় আসে, প্রতিকূল সময়, দুঃখ, কষ্ট, বিপদ আমাদের আঘাত করে। আমরা দিশেহারা হয়ে পড়ি, ভাবি কোথাও কোনো আশ্রয় নেই। কিন্তু যদি সত্যিই আমরা বিশ্বাস করি যে আমাদের সৃষ্টিকর্তা আমাদের ভালোবাসেন এবং সবকিছু তার হাতে, তাহলে ভয়ের কিছুই নেই। কারণ তিনিই ঝড় সৃষ্টি করেন, আবার তিনিই শান্ত করেন।